বাঁশখালী প্রতিনিধি:
বাঁশখালীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে ঠিকাদারকে মারধর ও ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী মুফিজুর রহমানকে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় তার নেতৃত্বে হামলা, মারধর ও অস্ত্র ঠেকিয়ে ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল শনিবার বিষয়টি জানাজানি হলে বাঁশখালীতে আলোচনা- সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
গত ২১ মে সকাল ৯টায় উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে নির্মাণাধীন ইডিসি ভবনের ৬ষ্ঠ তলার ছাদে এই ঘটনা সংঘটিত হয় বলে অভিযোগ করে পৌরসভার বাহারুল্লাহপাড়া এলাকার মুফিজুর রহমান ও তার সমর্থক আবদুল মান্নানসহ আরো অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করে নির্মাণাধীন ভবনের ঠিকাদার মুহিব্বুল্লাহ বাঁশখালী থানায় লিখিত এজাহার জমা দিয়েছেন।
এদিকে মুফিজুর রহমানের দাবি তিনি টাকা ছিনতাই কিংবা কাউকে মারধর করেননি। শ্রমিকদের টাকা না দিয়ে তাদের হয়রানি করার প্রতিবাদ করলে এ ঘটনা সাজানো হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২১ মে বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে ৬ তলা ভবনের ছাদে মেসার্স আল আরিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক ও ভবনের ঠিকাদার মুহিব্বুল্লাহ তার শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করছিল। এসময় মুফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ১৫-২০ লোক পিস্তল, ছুরি ও লোহার রড নিয়ে নির্মাণাধীন ৬ তলা ভবনের ছাদে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। তারা ঠিকাদার মুহিব্বুল্লাহর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এসময় মুহিব্বুল্লাহ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। তাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে মুহিব্বুল্লাহর ছেলে আলি মোহাম্মদ আরিফ ছিদ্দিকী (১৮) ও শ্রমিকদেরও মারধর করেন। এসময় অস্ত্র ঠেকিয়ে তার কাছ থেকে শ্রমিকদের বেতন ও মালামাল ক্রয়ের ৫ লাখ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন অস্ত্রধারীরা। এসময় মামলা কিংবা কোথাও অভিযোগ না করার ভয় দেখিয়ে ঠিকাদারের কাছ থেকে খালি স্টাম্পে স্বাক্ষরও নেন মুফিজ ও তার লোকজন। ঠিকাদার মুহিব্বুল্লাহ জানান, তাকে এবং তার ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। তারা বাঁশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। চাঁদা না দেওয়ায় তার উপর এই হামলা চালানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় বাঁশখালী থানায় লিখিত এজাহার জমা দিয়েছি।
হামলাকারীরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের হুমকিতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ৪ দিন ধরে ভবনের নির্মাণ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে ঢুকে চাঁদাবাজি, হামলা ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনা ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
হামলা, চাঁদাবাজি ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা অস্বীকার করে মুফিজুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের টাকা না দেওয়ায় তাদের অনুরোধে আমি প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলাম। ছলাম। মূলত শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ করতে ঠিকাদার পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা সাজিয়েছে।
বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি। উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে একটি ভবনের ছাদে এত বড় ঘটনা ঘটলে আশপাশে সবাই জানার কথা। কিন্তু কেউ মুখ খুলছেনা। অস্ত্র ঠেকিয়ে ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ সত্যিই রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেন ওসি সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, তবুও আমরা ঘটনার রহস্য বের করতে চেষ্টা করেছি।
https://slotbet.online/