নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গজারিয়ায় যুবলীগ নেতার ভাই “যুবলীগ কর্মী” নাজিম এর শেল্টারে চলছে অবৈধ সিসা কারখানা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য। মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের “নাইটমুল” হোটেল এর বিপরীত পাশে রোড সংলগ্ন বাউন্ডারি দেয়ালের মধ্যে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় ১টি পুরাতন ব্যাটারী আগুনে জ্বালিয়ে সীসা তৈরির কারখানা চলছে।
কারখানার দুষিত কালো ধোঁয়ায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। নষ্ট হওয়ার উপক্রম ফসলি জমি ও ফলজ বৃক্ষ৷
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০-২৫ জন শ্রমিক এই কারখানায় কাজ করছে। ব্যাটারি থেকে প্লেট বের করে তা আগুনে জ্বালিয়ে তৈরী করছে সিসার বার।
অনুসন্ধানে জানা যায় কারখানাটির মালিক গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার চাকুলী গ্রামের শরীফুল ইসলাম।
বিগত দিনে কারখানাটি স্থানীয় আওয়ামী নেতাদের ছত্রছায়ায় চলতো। আওয়ামী সরকারের পতন হলেও থেমে নেই এই অবৈধ কারখানাটি। বর্তমান স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার ভাইয়ের শেল্টারে কারখানাটি চলছে। অনুসন্ধানে জানা যায় স্থানীয় যুবলীগ কর্মী নাজিম বর্তমান কারখানাটির শেল্টার দাতা। ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর নাজিম খোলস পাল্টে হয়ে গেছেন নামধারী সাংবাদিক। আধিপত্য ধরে রাখতেই যুবলীগ কর্মী নাজিমের এমন কৌশল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান প্রতিদিন গভীর রাত হতে ভোর পর্যন্ত ব্যাটারীর প্লেট চুলায় জ্বালিয়ে সিসার বার তৈরী করা হয়।
এসময় আগুনের শিখা ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত উপরে ওঠে। চুলায় কয়লার ব্যবহার করে এসব ব্যাটারির প্লেট পোড়ানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা একাধিক ভুক্তভোগীগণ বলেন, যখন চুলায় কাঠ কয়লার আগুনে পুরাতন ব্যাটারির প্লেট জ্বালিয়ে সিসা তৈরি করে ,তখন আশেপাশের এলাকার মানুষজন বাড়ীতে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এসিড ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এছাড়াও এ ধোয়া কারণে চোখে, মুখে জ্বালাপোড়া শুরু হয়।
ক্ষতিকারক এ কারখানার এসিড ধোয়ার ফলে প্রতিনিয়ত শ্বাসকষ্ট সহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
এছাড়াও কারখানাটির দুষিত এসিড ধোঁয়া ও এসিড পানি নিষ্কাশনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ফসলি জমি ও নানান ধরনের গাছপালা। একাধিক গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ কারখানাগুলো স্থাপনের পরবর্তীতে আশেপাশে মারা গেছে গরু ও গৃহপালিত পশু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “এদের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ কোন কথা বলতে পারে না, প্রতিবাদ জানাতেও ভয় হয়”। তারা আরো বলেন “আমরা এদের কাছে অসহায় কখনো জোর করে কাউকে কিছু বলতে পারি না প্রাণভয়ে,কারণ এদের আছে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী”।
এলাকাবাসী আরও জানান এই কারখানার আশেপাশে মাঠের ঘাস কেটে গবাদিপশুকেও খাওয়াতে পারছেনা পশুর মৃত্যু ভয়ে।
ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, এই কারখানার আশেপাশের মাঠের ঘাস খেলেই গরু মারা যাবে।
কারখানাটির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কিনা তা জানতে চাইলে কারখানার মালিক শরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের পরিবেশের কোন কাগজপত্র নেই, সবাইকে ম্যানেজ করেই কারখানা চালাই”।
শরিফ গনমাধ্যমকে আরও বলেন “আপনারা নিউজ করলে করেন সমস্যা নাই, আমরা সবাইকে ম্যানেজ করেই চলি”। নিউজ করলে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোক, এসিল্যান্ড স্যার’ই তো আসবে দেখা যাবে নিউজ করে কি করতে পারেন”।
এলাকার সচেতন মহল ও ভুক্তভোগীগন অতি দ্রুত এই সিসা কারখানাটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এবং ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উচ্ছেদ করার জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ,ঢাকা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, গজারিয়া উপজেলা প্রশাসন, মুন্সিগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
https://slotbet.online/