অনিয়ম আর দুর্নীতির আঁতুড় ঘর কুষ্টিয়া জেলা ভেটেরিনারী হাসপাতাল।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ডা: কাজী আশরাফুল ইসলাম জেলা ভেটেরিনারী অফিসার হিসাবে কুষ্টিয়াতে
যোগদানের শুরু থেকে অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতিতে নিমগ্ন এই কর্মকর্তা। তিনি সপ্তাহে
তিন থেকে চার দিন অফিস করেন, সকাল ১১ ঘটিকায় শুরু হয় এই কর্মকর্তার অফিস আর দুপুর ২ টার
পরে তিনি নিয়মিত পাবনায় চলে যান, তার আসা এবং যাওয়ার সময় সাথে করে অত্র দপ্তরের উপসহকারী
কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম এর মোটরসাইকেল এ যান তিনি ফলে তিনি নিজে যেমন ঠিকমতো অফিস
করেন না পাশাপাশি তার অধিনস্থ আর একজন স্টাফ সাথে নিয় যাওয়াই জেলা ভেটেনারি হাসপাতাল হয়ে
পড়ে স্টাফ শূন্য। অফিস প্রধান হওয়া সত্ত্বেও কখনোই কর্মস্থলে অবস্থান করেন না এই কর্মকর্তা। অভিজ্ঞ ও
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা সেবা যেন প্রান্ত্রিক খামারিরা পেতে পারে সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে
রেফারেল হাসপাতাল হিসাবে জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কিন্তু
কর্মস্থলের বাইরে নিজ বাড়ি পাবনাতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের ধান্দায় সর্বদা
ব্যস্ত থাকেন এই কর্মকর্তা ফলে কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত প্রান্ত্রিক খামারীরা
সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা, এবং জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের দপ্তর প্রধান
হওয়ার সত্ত্বেও এবছরের জাতীয় দিবস সমূহ যেমন একুশে ফেব্রুয়ারি, ৭ই মার্চ, ১৭ ই মার্চ এবং ২৬
শে মার্চ সহ কোন জাতীয় দিবসেই কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন না এবং কোন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ
করেন নি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রদলের ক্যাডার ছিলেন এবং এই সরকারের সময়ে কোন
প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করবেন না বলে সর্বদা দম্ভক্তি করেন বলে তার দপ্তরের কর্মচারীরা জানিয়েছেন।
তিনি যতক্ষণ অফিসে থাকেন কক্ষের দরজা বন্ধ করে খোশ গল্পে অথবা মোবাইল চালানোই ব্যস্ত থাকেন ফলে
সেবা প্রার্থীরা বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি তার পূর্ব
পরিচিত পাবনায় উৎপাদিত দুইটি প্রিমিক্স কোম্পানির নিম্নমানের ঔষধ প্রায়ই প্রেসক্রিপশন করে
থাকেন এবং বিনিময়ে ওই দুটি অখ্যাত কোম্পানির থেকে প্রতিমাসে মোটা অংকের মাসোহারা
নিয়ে থাকেন। ওইসব ঔষধ নিকটস্থ ফার্মেসিতে রাখার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন তিনি, ফার্মেসিগুলো
এই অন্যায় দাবি না মানায় তাদের উচ্ছেদের জন্যেও বিভিন্ন জায়গায় তিনি তদবির শুরু করেছেন বলে
জানা গেছে । জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল পরিদর্শন কালে দেখা যায় উন্নত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা
সেবা দানের জন্য উক্ত হাসপাতালে বেশ কিছুদিন পূর্বে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, এক্সরে মেশিন, মলমূত্র
ও রক্ত পরীক্ষা করার জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে এখনো পর্যন্ত কোনোটিই প্যাকেট খোলা
হয়নি, এমনকি অত্যাধুনিক একটি ল্যাবরেটরির মালামাল দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং
রিএজেন্ট সমূহ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, ফলে অত্র এলাকার জনগণ উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে
বঞ্চিত হচ্ছে এবং সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট হচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কৃত্রিম
প্রজনন কর্মী, পল্লী চিকিৎসক এবং লাইভ স্টক সার্ভিস প্রোভাইডার কে ফোন দিয়ে তাকে কল বা রোগি
দেখার ব্যবস্থা করার জন্য চাপ দেন তিনি অন্যথায় তাদেরকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি দেয়ার ভয়
দেখান দিন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন পল্লী চিকিৎসককে তার দপ্তরে ডেকে এনে হেনস্থা করেছেন এবং
তাদের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অত্র দপ্তরের
একজন জানান, সেবা গ্রহীতার পাশাপাশি অত্র দপ্তরে অধস্থনও কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সাথে সর্বদা
অত্যন্ত দুরব্যবহার করেন ডা: কাজী আশরাফুল ইসলাম। কর্মজীবনে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার
জন্য তাকে থানচি, বান্দরবানে শাস্তি মূলক বদলি করা হয়, পরবর্তীতে সিলেটে জেলা প্রাণিসম্পদ
কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে প্রহৃত হন এই
কর্মকর্তা। সর্বশেষ ঈশ্বরদী, পাবনাতে উপ-পরিচালক কৃত্রিম প্রজনন হিসাবে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে
কৃত্রিম প্রজনন কর্মী নিয়োগে লক্ষ লক্ষ টাকার নিয়োগ-বাণিজ্যের কারণে কৃত্রিম প্রজনন কর্মীরা
তাকে কর্মস্থলে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে কুষ্টিয়াতে জেলা ভেটেরিনারি অফিসার হিসেবে বদলি করা
হলেও এখনো পর্যন্ত এই অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন এই সরকারি কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে ভেটেরিনারী অফিসার ডা: কাজী আশরাফুল ইসলামে সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আপনার যা
ইচ্ছে তাই লিখেন আমার কোন সমস্যা নাই।
https://slotbet.online/