উন্নয়ন কি পাড়া-মহল্লার কুস্তি? কেউ চিৎকার করলেই কি জাতীয় প্রকল্প সেখানেই নামিয়ে ফেলতে হবে? দেশের জন্য ভাবতে হলে আগে বুঝতে হবে—জাতীয় স্বার্থ মানে নিজের বাড়ির পাশ দিয়ে রাস্তা যাওয়া নয়। চীন যখন তিস্তা প্রকল্পের অংশ হিসেবে এক হাজার শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব দেয়, তখন সেটা কোথায় হবে, তা চিল্লাচিল্লি করে না—তথ্য, যুক্তি, ভূপ্রকৃতি, অবকাঠামো আর সরকারের পরিকল্পনায় ঠিক হয়।
নীলফামারীই সেই স্বাভাবিক পছন্দ। কেন? তিস্তা ব্যারাজ, উত্তরা ইপিজেড, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেল-সড়ক সংযোগ, চিলাহাটি স্থলবন্দর—সব কিছু এই জেলার আশেপাশেই। মানে, পুরো অঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দু। এখানেই সরকার বড় বড় প্রকল্প বসাচ্ছে, এখানেই আধুনিক হাসপাতাল হলে তা রংপুর বিভাগের জন্য গেম চেঞ্জার হতে পারে।
কিন্তু কিছু লোক, যারা কলমকে কবর বানিয়ে রেখেছেন, তারা ‘অঞ্চল প্রেমিক’ সাজতে গিয়ে জনমনে বিভেদ ছড়াচ্ছেন। ভাই, উন্নয়ন মানে নিজের গ্রামের বাজারে ফটোসেশন নয়। এটা সবার জন্য সুফল আনার বিষয়। নিজের উপজেলায় না হলেই বঞ্চনা, এটা কোন ধরনের যুক্তি? তাহলে তো পদ্মা সেতুও এলাকায় এলাকায় একটা করে বানাতে হতো!
ভ্রান্ত চেতনায় বুঁদ হয়ে নিজেদের এলাকা নিয়ে আবেগি পোস্ট না দিয়ে বরং ভাবুন—জাতীয় উন্নয়ন মানে গোটা দেশের জন্য সুফল। উন্নয়ন প্রতিযোগিতা হতে পারে, কিন্তু হিংসা, অপপ্রচার আর আঞ্চলিক ঈর্ষার মঞ্চ নয়।
আর হ্যাঁ, নিজের উঠোনে হাসপাতাল না হলেই যদি উন্নয়নবিরোধী হয়ে যান, তাহলে ইতিহাস আপনাকে স্মরণ করবে না উন্নয়নযোদ্ধা হিসেবে—বরং চিনবে সংকীর্ণ এক আত্মকেন্দ্রিক নাগরিক হিসেবে।
লেখক: আল হেদায়েতুল্লা (সুজন), সাংবাদিক
https://slotbet.online/