সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর চরাঞ্চলে এক নির্মম ডাকাতির ঘটনায় খুন হয়েছেন এক নিরীহ কৃষক। বুধবার (২১ মে) ভোররাতে উপজেলার পশ্চিম খাষকাউলিয়া চরের অস্থায়ী খামারে সংঘটিত হয় এই হৃদয়বিদারক ঘটনা। নিহত কৃষকের নাম তারা মিয়া (৬৫)। তিনি পশ্চিম জোতপাড়া গ্রামের মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষক তারা মিয়া দীর্ঘদিন ধরে চরাঞ্চলে গবাদি পশু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার একমাত্র সঙ্গী ছিল নাতি ইব্রাহিম হোসেন। চলতি মৌসুমেও তিনটি গরু নিয়ে যমুনার চরে অস্থায়ী ঘর তুলে বসবাস করছিলেন তারা। তবে সেই ঘরেই এক ভয়ঙ্কর রাতের সাক্ষী হতে হয় তাদের।
চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন জানান, বুধবার ভোররাতে ১০–১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড হাতে নিয়ে খামারে হানা দেয়। তারা প্রথমেই কিশোর ইব্রাহিমকে মারধর করে বস্তাবন্দি করে আটকে রাখে। পরে তারা মিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে নৃশংসভাবে মৃত্যু নিশ্চিত করে ডাকাতরা। এরপর তারা তিনটি গরু লুট করে নৌকায় পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ওসি আরও জানান, ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর গোটা চরাঞ্চলে নেমে এসেছে চরম আতঙ্ক। স্থানীয় খামারি ও গ্রামবাসীরা নিজেদের নিরাপত্তাহীন মনে করছেন। তাদের অভিযোগ, চরাঞ্চলে পুলিশের উপস্থিতি অত্যন্ত সীমিত, যার ফলে ডাকাতরা সহজেই এসব এলাকায় তাণ্ডব চালাতে পারে। তারা অবিলম্বে নিয়মিত পুলিশ টহল ও নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।
নিহতের পরিবারে শোকের ছায়া। নাতি ইব্রাহিম এখনো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তার চোখের সামনে দাদাকে খুন করে ডাকাতরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাওয়ায় সে বাকরুদ্ধ। স্থানীয় মুরুব্বিরা বলেন, তারা মিয়া ছিলেন শান্তিপ্রিয়, নির্লোভ একজন মানুষ। তার এই নিষ্ঠুর মৃত্যু চরবাসীর হৃদয়ে গভীর শোকের রেখা এঁকে দিয়েছে।
সাত্তার আব্বাসী
২১.০৫.২০২৫ইং।
০১৭১১৪৭৫৭৫২।
https://slotbet.online/