সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার বাসুদেবকোল উত্তরপাড়ায় লম্পট শ্বশুড় আবু সামাদ কর্তৃক নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধী পুত্রবধু (১৯) ধর্ষনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি গত ১৪ জুলাই রাতের। পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসি ঘটনাটি জেনেও কৌশলে তা গোপন রাখেন। ভিকটিমের পক্ষ্য থেকে অভিযোগ দিলেও নথিভুক্ত না করে গড়িমশি ও টালবাহানা করে পুলিশ। গড়িমসির কারনে অবশেষে পালিয়ে যায় ধর্ষক শ্বশুড়।
এদিকে, ঘটনার এগার দিন পর বিষয়টি জানাজানি হলে সংবাদকর্মীদের পক্ষ্য থেকে সলঙ্গা থানার ওসিসহ জেলা পুলিশ সুপারকে জানানো হয়।
শুক্রবার সকালে সলঙ্গা থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল ও ভুক্তভোগী নারীর
বাড়িতে যান। সাংবাদিকরাও সেখানে যান। পুলিশ ও সাংবাদিক যাবার খবরে নিজ ঘর আগেই তালাবদ্ধ করে দ্রুত পালিয়ে যান অভিযুক্ত আবু সামাদ।
ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামী দু’জনেই শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। গত দু’বছর আগে বিয়ে হলেও ছেলেমেয়ে নেই। এ সুযোগে বার বার ধর্ষনের শিকার হন ভুক্তভোগী।
এদিকে, গত ১৫ জুলাই বাসুদেবকোল উত্তরপাড়ার কতিপয় টাউট ও স্থানীয় ইউপি সদস্য স্থানীয়ভাবে বসেন। দরবার-সালিশ না করেই ভুক্তভোগী নারীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেবার চেষ্টা চালায়।
অপরদিকে, সলঙ্গা থানার পুলিশ বিষয়ে জেনেও চেপে যায়। অভিযোগ পেয়েও কৌশলে গড়িমশি করে পুলিশ।
শুক্রবার থানার পাঁচিলা গ্রামে গেলে ভুক্তভোগী নারী জানান, ‘স্বামী হোটেল মেসিয়ারের চাকরী করেন। মাসের বেশীরভাগ সময় তিনি রাতেও হোটেলেই থাকেন। ১৪ জুলাই শ্বাশুড়ি-ননদকেও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন শ্বশুড়। এরপর রাতে শ্বশুড় আমার ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষন করেন। এর আগেও তিনি ভয় দেখিয়ে আমাকে ৭/৮ বার ধর্ষন করেছেন। বাধ্য হয়ে ঘটনাটি আমি আমার পরিবারকে জানাই। আমার বাবা ও দুলাভাই এসে গ্রামবাসির কাছে বিচার চাইলেও পাননি।
ভুক্তভোগী ওই নারীর মা জানান, ‘আমার স্বামী ও বড় মেয়ের জামাই গত ১৯ জুলাই স্বশরীরে গিয়ে সলঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসেন। এক সপ্তাহেও আমলে নেয়নি পুলিশ।’
সলঙ্গা থানার ওসি এনামুল হক শুক্রবার দুপুরে বলেন, দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বাসুদেবকোল ও পাঁচিলায় পাঠানো হয়েছিলে। ভুক্তভোগী ওই নারী ও
তার পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বললেও ধর্ষনের বিষয়টি কেউই স্বীকার করেনি। বরং ধর্ষনের চেষ্টার কথা বলেছে। তারপরেও ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেলে
ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল দুপুরে সংবাকর্মীদের বলেন, ‘বিষয়টি দেখতে
ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত: আসামী পক্ষের সাথে সখ্যতা, ঘুষ-বানিজ্য ও মামলা নিতে গড়িমশিসহ নানাবিধ হয়রানীর অভিযোগ রয়েছে সলঙ্গা থানার ওসি এনামুল হকের বিরুদ্ধে। গত বছরের ১৩ আগষ্ট জাতির এক শোক দিবসের দিনে সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় শ্রমিকদের ‘ডিজেপার্টির’ নাচগানে যোগদান করে বিতর্কের মধ্যে পড়েন ওসি।
‘ডিজেপার্টির’ যোগদানের ওসি এনামুলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে
পড়ে। পুলিশ সুপারের নির্দেশে রায়গঞ্জ সার্কেল অফিস থেকে একাধিকার তদন্ত হলেও তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যেকারনে বেপরোয়া
তিনি।
https://slotbet.online/