কঙ্কাল ব্যবসা, হলের সিট দখল, র্যাগিং, চাঁদাবাজি, অস্ত্র বহন, মাদক সেবন, মহিলা হোস্টেলে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে হুমকি ও নির্যাতনের ঘটনায় ২০ শিক্ষার্থীকে শাস্তি দিয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ওই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ছয় শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার এবং অপর ছয় শিক্ষককে বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রামেক একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। শাস্তিপ্রাপ্ত সকলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
রামেক সূত্রে জানা গেছে, শাস্তিপ্রাপ্ত ২০ শিক্ষার্থীর মধ্যে এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের সজীব আকন্দকে তিরস্কার ও অভিভাবকের উপস্থিতিতে মুচলেকার এবং অপর ১৯ জনকে হোস্টেল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া তাদের ছয় মাস থেকে ১২ মাস পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
তাদের মধ্যে ১২ মাসের শাস্তিপ্রাপ্তরা হলেন, এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের বখতিয়ার রহমান, আরাফাত জুলফিকার ডেভিড, নকিবুল ইসলাম শাকিল, ফারিয়া রেজোয়ানা নিধি, নাফিউ ইসলাম সেতু, ৬৩তম ব্যাচের শেখ সাকিব ও সোহম বিজয়।
আর ৬ মাসের শাস্তিপ্রাপ্তরা হলেন, ৬১তম ব্যাচের রাশিদ মোবারক, ৬২তম ব্যাচের হাসিবুল হাসান শান্ত, আশিকুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, শোয়েব আকতার শোভন, জুহাইর আঞ্জুম অর্ণব, মাহফুজুর রহমান, ৬৩তম ব্যাচের কাজী হানিফ, পূর্ণেন্দু বিশ্বাস, ৩১তম বিডিএস ব্যাচের নূর এ জান্নাত কিন্তু এবং ৩৩তম বিডিএস ব্যাচের ফারদিন মুনতাসির।
জানা গেছে, এই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানার পরও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ৬ শিক্ষককে অন্যত্র বদলির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অপর ৬ শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
রামেক অধ্যক্ষ ডা. খন্দকার ফয়সল আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে কলেজের ৩৪ শিক্ষক ও ৪৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে ৮ জন অধ্যাপকের নেতৃত্বে কমিটি গঠিত হয়। একইভাবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করেন অপর ৮ শিক্ষক। কমিটি তদন্ত করে ২০ জন শিক্ষার্থী ও ১২ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায়। বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপন ও সিদ্ধান্ত হয়।
অধ্যক্ষ বলেন, যারা অভিযোগ তুলেছে, তারা আমার শিক্ষার্থী। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তারাও আমার শিক্ষার্থী। নির্মোহ তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের শাস্তির সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। ঐ সুপারিশ একাডেমিক কাউন্সিলে অনুমোদিত হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে। যারা উপস্থিত ও শাস্তিপ্রাপ্ত, তাদের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হবে। ৬ শিক্ষকের ক্ষেত্রেও তা’ই হবে। অপর ৬ শিক্ষক অন্যত্র বদলি হবেন।
https://slotbet.online/