আলহাজ্ব সরকার টুটুল তাড়াশ ঃ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের মনোহরপুর থেকে পৌওতা বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁচামাটির রাস্তা এখন চলাচলের অনুপযোগী। বছরের পর বছর সংস্কারের অভাবে রাস্তা ভেঙে গিয়ে বৃষ্টির মৌসুমে পরিণত হয় কর্দমাক্ত জলাশয়ে। সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাদা-পানি জমে সৃষ্টি হয় চরম দুর্ভোগের।
বর্ষা এলেই বিপদে পড়ে গ্রামবাসী সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে—মনোহরপুর থেকে পৌওতা পর্যন্ত রাস্তাটির কোথাও ইট বা খোয়ার ছোঁয়া নেই। বর্ষার সময়ে বৃষ্টির পানি ও কাদা একাকার হয়ে পুরো রাস্তা হয়ে ওঠে পিচ্ছিল ও বিপজ্জনক। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় গ্রামবাসীকে প্রতিদিনই এই কাদামাখা পথ মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ী, বৃদ্ধ ও নারী—সকলের জন্যই এটি এক অসহনীয় দুর্ভোগ।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমের প্রায় পাঁচ-ছয় মাস এই দুর্ভোগ লেগেই থাকে। এই সময়ে ভ্যান-রিকশা তো দূরের কথা, মোটরসাইকেল কিংবা সাইকেলও চলাচল করতে পারে না। জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত এই রাস্তায় ঢুকতে না পারায় অসুস্থ রোগীকে কাঁধে তুলে কর্দমাক্ত পথ পাড়ি দিতে হয়। এতে অনেক সময় জীবন-মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হয়।
জীবনযাত্রা ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ—রাস্তার এই বেহাল অবস্থার কারণে সময়মতো কৃষিপণ্য বাজারে নিতে না পারায় তারা আর্থিক ক্ষতির শিকার হন। পচনশীল ফসল অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা কাদা মাড়িয়ে স্কুলে যেতে গিয়ে জামাকাপড় নোংরা ও ভিজে যাওয়ায় ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না।
গ্রামের কয়েকজন নারী-পুরুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এই দুর্ভোগ শুধু কথা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। বৃষ্টির দিনে হাটে-বাজারে যাওয়া যায় না, বিয়ে-শাদির মতো অনুষ্ঠানও বাধাগ্রস্ত হয়। বারবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে বলেও কোনো কাজ হয়নি।”
জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের বক্তব্য বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মইনুল হক বলেন,এলাকাবাসীর দুর্ভোগ আমি ভালোভাবেই জানি। বহুদিন ধরে চেষ্টা করছি রাস্তাটি পাকা করার জন্য। আশা করি, দ্রুতই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন,
“আগামী বরাদ্দে আমরা রাস্তাটি পাকা করার চেষ্টা করব। বিষয়টি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে।”
দ্রুত পদক্ষেপের দাবি মনোহরপুর ও পৌওতা গ্রামের মানুষের একটাই দাবি—দ্রুত এই রাস্তা সংস্কার ও পাকা করা হোক। তাদের বিশ্বাস, এই এক কিলোমিটার রাস্তা উন্নত হলে শুধু যাতায়াতের দুর্ভোগই দূর হবে না, বরং এলাকার শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা ও সামগ্রিক উন্নয়নও গতিশীল হবে।
https://slotbet.online/