২৩৭ আসনে প্রাথমিক মনোনয়নের তালিকা ঘোষণার পর থেকেই বেশ কিছু আসনে বিএনপির অভ্যন্তরে বিতর্ক ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বিতর্কিত, বার্ধক্যজনিত সমস্যাযুক্ত, সংস্কারপন্থি, অযোগ্য ও হাইব্রিড নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূলে তীব্র দলীয় কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দলটি কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে।
প্রার্থিতা স্থগিত ও পরিবর্তনের তোড়জোড়
মাদারীপুর-১ আসনে বিতর্কিত কামাল জামাল মোল্লার প্রার্থিতা ইতিমধ্যেই স্থগিত করা হয়েছে।
অর্ধশতাধিক আসনে এখনো প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ ও মিছিল চলছে।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, সবমিলিয়ে ৩০টির মতো আসনে প্রার্থী পরিবর্তন আসতে পারে।
প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত ২৩৬ জনের মধ্যে যাদের নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা অভিযোগ নেই, শুধু তারাই চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন।
বিতর্কিত প্রার্থীদের অবস্থান নতুন করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে এবং একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মাঠের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
হাইকমান্ডের বক্তব্যঃ
দলের সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তালিকায় পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক:
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন (স্থায়ী কমিটির সদস্য):
বিএনপিতে অনেক যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। তবে সবাইকে তো আর মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য কিছু আসনে প্রতিবাদ করে হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।
এবার সবাই মনে করছেন মনোনয়ন পেলেই পাস। কিন্তু কাকে মনোনয়ন দিলে বিজয়ী হয়ে আসতে পারবে তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
নজরুল ইসলাম খান (স্থায়ী কমিটির সদস্য):
বিএনপি বড় দল। মনোনয়ন ঘোষণার পর কিছু আসনে আপত্তি উঠতে পারে- এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।
এটা দলের প্রাথমিক তালিকা। চূড়ান্ত তালিকা নয়। প্রয়োজনে যেকোনো সময় তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক সদস্যঃ
সংশোধনের সময় এখনো আছে। বিতর্কিত প্রার্থীদের নতুন করে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষে নিয়ম মেনে দলের স্থায়ী কমিটি ও পার্লামেন্টারি বোর্ড কিছু আসনে পরিবর্তন আনতে পারে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনোনয়ন ঘোষণার সময়েই পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন, এটি সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা এবং প্রয়োজনে পরিবর্তন আসতে পারে।
শরিকদের সঙ্গে সমঝোতাঃ
যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতার জন্যেও কয়েকটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে।
পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলন চলছে যেসব আসনে (রাজশাহী বিভাগ সহ)
নিম্নলিখিত আসনগুলোতে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলন চলছে এবং এর মধ্যে কিছু আসনে পরিবর্তনের আলোচনা রয়েছে:
বিভাগ ও জেলা আসন নম্বরঃ
রাজশাহী বিভাগ | রাজশাহী-১, ৩ ও ৪
সিরাজগঞ্জ-৩, নাটোর-১, নওগাঁ-১, ৩ ও ৪, পাবনা-৪
ঢাকাঃ ঢাকা-৫, ঢাকা-১২
চট্টগ্রামঃ চট্টগ্রাম-২, ৪, ১২, ১৩ ও ১৬; ফেনী-২; বান্দরবান
সিলেট সুনামগঞ্জ-১; মৌলভীবাজার-২; হবিগঞ্জ-৪
খুলনা কুষ্টিয়া-২, ৩ ও ৪; মাগুরা-২; সাতক্ষীরা-২ ও ৩
রংপুর, দিনাজপুর-১, ২ ও ৪; গাইবান্ধা-৪; নীলফামারী-৪; কুড়িগ্রাম–১ ও ৩; জয়পুরহাট-১ ও ২
ময়মনসিংহ জামালপুর-২; শেরপুর-২; ময়মনসিংহ-৩, ৬, ৯ ও ১১; নেত্রকোনা-৩, ৫
অন্যান্য চাঁদপুর-৪; ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪, ৫; নরসিংদী-৪; টাঙ্গাইল-১, ৩; মুন্সীগঞ্জ–১; কিশোরগঞ্জ-৫; কুমিল্লা-৫, ৬ ও ১০; রাজবাড়ী–২
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
জানা যায়, ২০০৮ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ প্রথমে প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করে এবং পরে চূড়ান্ত মনোনয়নে অর্ধশতাধিক আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করেছিল।
https://slotbet.online/