মোঃ সিফাত উল্লাহ, বরিশাল
বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ ১৭টি ও ঢাকাসহ দূরপাল্লার সব পথে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শনিবার রাতে অর্ধেক ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রমিকদের বিরোধের পর টার্মিনালের শতাধিক বাস ও কাউন্টার ভাঙচুরের কারণে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. মোসারেফ হোসেন বলেন শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে সরকারি কোনো গেজেট নেই। তবু বাস মালিক-শ্রমিকরা হাফ ভাড়া নেয়। বন্ধের দিনও তারা হাফ ভাড়া দেয়। এতে শ্রমিকদের সঙ্গে ঝামেলা হয়। আমরা সেটা মিটিয়ে দেই।
“কিন্তু শনিবার রাতে দুই ঘণ্টা যা হয়েছে, সেটা কোনোভাবে কাম্য নয়। টার্মিনালে থাকা শতাধিক বাস ভাঙচুর করা হয়েছে, একটিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৫০টি কাউন্টারে ল্যাপটপসহ সবকিছু ভাঙচুর করা হয়েছে। টাকা লুট করা হয়েছে। এতে তাদের চার-পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
সভাপতি মোসারেফ বলেন, “এতগুলো বাসের গ্লাস আনা, লাগানোর মিস্ত্রি তো নেই। কাউন্টারে বসে টিকিট বিক্রির তো কোনো উপায় নেই। এগুলো মেরামত না করে কিভাবে বাস চালানো যাবে। তারপরেও রোববার সন্ধ্যার পর প্রশাসন, বিএম কলেজ অধ্যক্ষসহ বাস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে বৈঠক হবে। সেখানে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে কবে নাগাদ চালু করা যাবে।”
প্রতিদিন বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন পথে প্রায় পাঁচশ বাস ছেড়ে যায়। আর পাঁচশ বাস আসে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ পথে রুটে চলাচল করে ১৭০টি বাস। বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় চার হাজার শ্রমিক ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ ছাড়া বাস মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির বরিশাল মহানগর সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, “যার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে স্ব স্ব সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সাকুরা পরিবহনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক পলাশ হাওলাদার বলেন, প্রতিদিন তাদের ৫০টি বাস চলাচল করে। প্রত্যেকটি বাসে ২০টি করে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা ছিল। রোববার সকাল থেকে তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে
এদিকে, বরিশাল বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। কলেজের জিরো পয়েন্ট থেকে মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বাস শ্রমিকদের হামলায় তাদের অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শ্রমিকদের মধ্যে থাকা ‘আওয়ামী প্রেতাত্মারা’ এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। বাস টার্মিনালের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে একটি সুষ্ঠু বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলার দাবি করেছেন। একই সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা না হলে কঠোর আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি আল মামুন উল ইসলাম বলেন, “নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। তবে দেশের অন্যান্য স্থান থেকে বাস এসেছে। বর্তমানে টার্মিনাল এলাকা শান্ত।
“শনিবার রাতের ঘটনায় দুই পক্ষের ১০-১২ আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
https://slotbet.online/