তরিকুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক
ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজ প্রাক্তন ছাত্র সমিতির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি (২০২৫–২০২৬) এর প্রথম সভা গত ১০ নভেম্বর, সন্ধ্যা ৬ টায় সমিতির স্থায়ী কার্যালয় ঢাকার মিরপুরে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি জনাব প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, এবং সভাটির কার্যক্রম পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জনাব রকিবুস সুলতান মানিক।
সভায় সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল আবেদীন ডলার সহ নির্বাহী কমিটির নতুন নির্বাচিত অন্যান্য সম্মানিত সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্তসমূহ:
সভায় সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে গঠনতন্ত্র অনুসরণ, অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও কল্যাণমূলক কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়:
আঞ্চলিক কমিটি স্থগিত ও পুনর্গঠন: গঠনতন্ত্র অনুসারে আঞ্চলিক কমিটি, রংপুর এবং আঞ্চলিক কমিটি, রাজশাহীর মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমিতির নিয়ম অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠন করে কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে।
চাঁদা নির্ধারণ: সমিতির অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের জন্য প্রতি মাসে ৫০০ টাকা মাসিক চাঁদা দেওয়ার প্রস্তাব গৃহীত হয়। তবে, বিশেষ সদস্যদের ক্ষেত্রে আলোচনা সাপেক্ষে চাঁদার পরিমাণ কিছু কম হতে পারে।
কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় সুদৃষ্টি: গত ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের সফলতার (বিশেষ করে খাবারের মান) প্রশংসা করা হয়। নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হলেও, ভবিষ্যতে কমিটি গঠনের সময় আরও সুদৃষ্টি দেওয়ার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।
প্রচারণা ও উপস্থিতি: সম্প্রতি আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রচারণাকে সঠিক বলে মত দেওয়া হয়, তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে উপস্থিতি সন্তোষজনক না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
ভবিষ্যৎ মিটিংয়ের কার্যপ্রণালী: সভায় গৃহীত হয় যে, পরবর্তীতে প্রতিটি মিটিংয়ে আলোচ্যসূচি সম্বলিত লিফলেট বা কার্যপত্র থাকবে, যা সভার কার্যক্রমে আরও শৃঙ্খলা আনবে।
মানবিক ও উন্নয়নমূলক উদ্যোগ:
সভায় কারমাইকেল কলেজ এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বেশ কিছু মানবিক ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়:
শীতবস্ত্র বিতরণ: সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে আগামী শীতের সময় দুস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি: সমিতির পক্ষ থেকে কারমাইকেল কলেজের গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান করার প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়।
কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন: প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কল্যাণে এবং দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমিতির পক্ষ থেকে একটি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করার প্রস্তাবনাও সভায় উপস্থাপন করা হয়।
রংপুর শহরে ১৫ শতাংশ জমি দানের ঘোষণা:
সভায় সমিতির এক মহান উদ্যোগের কথা তুলে ধরা হয়। সমিতির ডোনার ও উপদেষ্টা ডা. হালিদা হানুম আখতার রংপুর শহরে কারমাইকেল কলেজ প্রাক্তন ছাত্র সমিতির ব্যবহারের জন্য প্রায় ১৫ শতাংশ জমি দান করার মহৎ ইচ্ছে পোষণ করেন। তাঁর শর্ত হলো— জমিটি মানবিক ও সামাজিক কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তার মায়ের নামে দান করা হবে। সমিতির পক্ষ থেকে তার এই মহান উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
কারমাইকেল কলেজের উন্নয়নে অংশীদারিত্ব:
সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত ও সক্রিয় করার পাশাপাশি, সমিতির পক্ষ থেকে কারমাইকেল কলেজের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। এই বিষয়ে কলেজের প্রশাসনের সাথে দ্রুত আলোচনার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।
সকল আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর, উপস্থিত সদস্যরা কারমাইকেল কলেজের ১০৯তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে একটি বিশাল আকৃতির সুন্দর কেক কাটেন। কেক কাটার পর সবাই রাতের খাবারে অংশ নেন।
সমিতির সকল সদস্য হৃদয়ের গভীর থেকে এই কামনা ব্যক্ত করেন, যোগ্য নেতৃত্বে কারমাইকেল কলেজ প্রাক্তন ছাত্র সমিতি একতা, আন্তরিকতা আর সেবার মনোভাব নিয়ে আরও শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ হোক। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বন্ধন দৃঢ় হোক এবং আমাদের প্রিয় শিক্ষালয়টির উন্নয়ন ও সম্মান উজ্জ্বল হোক সকল কারমাইকেলিয়ানদের হাত ধরে।
https://slotbet.online/