মোঃ আবু জাহিদ
।।অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে হাটের ইজারা, জড়িত রয়েছেন হত্যা মামলার আসামী।।
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ইবি থানাধীন মধুপুর গরুর হাট এলাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে টুটুল হত্যাকণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসছে। মধুপুর কলার হাট দখলকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যে ও সরজমিন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সব চাঞ্চল্যকর তথ্য ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মধুপুর কলার হাট ইজারা নেয় উপজেলার পিয়ারপুর এলাকার মৃত আহাদ আলী বিশ্বাসের ছেলে শরিফুল ইসলাম (শরিফুল মেম্বার) । তার আগে ৮ জন ব্যক্তি কলার হাটের ইজারা নিতে দরপত্র জমা দেন । তবে ইজারা গ্রহিতা ব্যক্তি সর্বোচ্চ দামে ইজারা পায়। তবে তিনি হাট নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়। অভিযোগ রয়েছে, তাকে হাট ছেড়ে দিতে বিভিন্ন ভাবে ( একাধিক নিষিদ্ধ চরমপন্থী সংগঠন) চাপ প্রয়োগ করতে থাকে । এতে ইজারা গ্রহীতা তার পূর্বপরিচিত এক নিকট আত্মীয়, মোঃ ইউনুস আলী নামের এক ব্যক্তিকে হাট আম-মোক্তার নামা করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকে জানিয়েছেন, বাজার গ্রাহিতা মোঃ শরিফুল ইসলাম (মেম্বার) মোঃ ইউনুসের নামে হাটের ইজারা আম-মোক্তারনামা করলে বর্তমানে বাজারের খাজনা তুলছে যারা এরা ক্ষিপ্ত হয়ে, নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে থাকেন এবং বিভিন্নভাবে বাজার তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। এঘটনার জের ধরেই তারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটাতে পারে। যাতে করে মোঃ ইউনুস ও মোঃ শরিফুল ইসলাম (মেম্বার) উভয়ই হাট ছাড়তে বাধ্য হয়।
এদিকে, বর্তমানে অবৈধ ভাবে কলা হাটের ইজারা উঠানোর অভিযোগ রয়েছে। এবং নিজেরা স্বীকার ও করেছেন, ইজারা উঠানোর বিষয়ে। উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুর এলাকার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফার ভাতিজা, বোম রেজাউল (বোমা রেজাউল) এর সার্বিক সহযোগিতায় হাটের ইজারা তুলছেন ৮ ব্যক্তি। তারা হলেন, টুটুল হত্যা মামলার আসামী ১/ মোঃ ইউনুস সরকার, ২/ মোঃ আঃ মান্নান, ৩/ মোঃ রইস, ৪/ মোঃ নুর ইসলাম, ৫/ মোঃ জহুরুল ইসলাম, ৬/মোঃ কামাল হোসেন, ৭/ মোঃ নিকবার মন্ডল ও ৮/ মোঃ আঃ কুদ্দুস। এদের মধ্যে মোঃ আঃ মান্নানসহ (লক্ষিপুরের মান্নান) বেশ কয়েকজন টুটুল হত্যাকাণ্ডের পরে থেকে দীর্ঘদিন আত্নগোপনে ছিলেন বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছেন, হাটের ইজারার নিতে তারা ৮ জন মিলে শরিফুলকে টাকা দিয়েছেন। হাট শরিফুল পেলেও এখন তাদের নামে। তাই হাটের ইজারা তারা তুলেন। এবিষয়ে কাগজপত্র দেখাতে বলা হলে, প্রথমে আন্তরিকতার সহিত রাজী হলেও, পরবর্তী তে বিভিন্ন তালবাহানা, কথা বার্তা শুরু করেন, এবং সর্বশেষ, তারা চুক্তিনামার কাগজপত্র দেখাতে না পরে, ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এছাড়াও দাবি করেন উক্ত কাগজপত্র ইবি থানার ওসিকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছি। তিনি দেখেছেন এবং সব জানেন।
এবিষয়ে হাটের ইজারা গ্রহীতা মোঃ শরিফুল ইসলামের (মেম্বার) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন তিনি মোঃ ইউনুস আলীকে (বাগাচড়া বাসা মোঃ ইউনুস) হাটের আম-মোক্তারনামা করে দিয়েছেন। অন্য কাউকে না কোন দায়িত্ব দেন নি।
আম-মোক্তারনামা গ্রহীতা মোঃ ইউনুস আলী বলেন, তিনি কাউকে ইজারা তোলার দায়িত্ব দেন নাই। আবার তিনি বিভিন্ন চাপে ইজারাও তুলতে পারছেন না।
এবিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মেহেদি হাসান বলেন, তার কাছে এমন কাগজ কেউ পাঠায়নি।
এদিকে হাটে অবৈধভাবে চাঁদা তোলার ঘটনায় অনৈতিক সুবিধা পেয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে। টুটুল হত্যা মামলার আসামীসহ পলাতক ব্যক্তিরা হঠাৎ করে বাজার দখল নিয়ে চাঁদা তোলায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কি হাট দখলকে কেন্দ্র করে টুটুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে?
এছাড়াও এঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট নানা তথ্য-উপাত্ত আমাদের হাতে এসেছে। এছাড়াও নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের অনুসন্ধান চলমান।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুন রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ইবি থানাধীন মধুপুর কলার হাট এলাকার একটি চায়ের দোকানে প্রকাশ্যে টুটুল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত টুটুল হোসেন ইবি থানার মধুপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত তোরাপ আলীর ছেলে। পেশায় তিনি একজন মুদি দোকান ব্যবসায়ী।
পরে এঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহতের ছেলে বাদী হয়ে ইবি থানায় বলে জানা যায়। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাব ইনস্পেকটর (এসআই) দেবজিৎ কুমার সানার সাথে যোগাযোগ করে, মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, তদন্ত চলমান আছে এর বেশি কাউকে কোনো তথ্য দিতে বাধ্য না বলে ও, জানান।
https://slotbet.online/