শহীদ আবু সাঈদ ছবি: সংগৃহীত
তরিকুল ইসলাম, রংপুর
আজ ১৬ই জুলাই, শোক ও শ্রদ্ধার সাথে সারাদেশে পালিত হচ্ছে জুলাই শহীদ দিবস। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় এক লড়াকু ছাত্রের আত্মত্যাগ এবং তার শাহাদাতের মধ্য দিয়ে জ্বলে ওঠা এক গণআন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গকে। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদ আজকের এই দিনেই পুলিশের গুলিতে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শহীদ হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ।
সাঈদের রক্ত রাজপথ রঞ্জিত করার পর পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল আপামর ছাত্রসমাজ। তার আত্মত্যাগ যেন ঘুমিয়ে থাকা বারুদে আগুন জ্বেলে দিয়েছিল। শুরু হয়েছিল এক তুমুল আন্দোলন— যা পরবর্তীতে জুলাই বিপ্লব নামে পরিচিতি লাভ করে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির পক্ষে এই আন্দোলন দ্রুতই দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা পেরিয়ে সাধারণ মানুষও সংহতি জানিয়েছিল এই আন্দোলনের সাথে।
আবু সাঈদ কেবল একটি নাম নয়, তিনি প্রতিরোধের এক প্রতীক। তিনি প্রমাণ করে গেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস থাকলে কোনো বাধাই অপ্রতিরোধ্য নয়। তার আত্মদান বৃথা যায়নি; বরং তা দেশের ছাত্র আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল।
আজকের এই দিনে আমরা আবু সাঈদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তার শাহাদাত আমাদের শিক্ষা দেয় যে, দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে তরুণ সমাজের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তার আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায় অন্যায়, অবিচার ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে লড়াই করার।
জুলাই শহীদ দিবস কেবল একটি স্মরণ দিবস নয়, এটি প্রতিবাদের কণ্ঠস্বরকে আরও দৃঢ় করার এবং ভবিষ্যতের প্রতিটি গণতান্ত্রিক সংগ্রামে আবু সাঈদের মতো শহীদদের আত্মত্যাগকে ধারণ করার একটি অঙ্গীকারের দিন। আসুন, আমরা সকলে আবু সাঈদের স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে একটি শোষণহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে অঙ্গীকারবদ্ধ হই।
https://slotbet.online/