নীলফামারীতে আদালত থেকে জমির মালিকানা সংক্রান্ত রায় পাওয়ার পরও জমি দখলের পায়তারা চালানোর অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিজস্ব জমিতে রোপণ করা প্রায় চার শতাধিক কলাগাছ উপড়ে ফেলে নষ্ট করার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরি সরকারপাড়া এলাকার বাসিন্দা শ্যামল চন্দ্র সরকার। তিনি মৃত দ্বীজেন্দ্র নাথ সরকারের পুত্র।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একই এলাকার জেএল নং-২৬, সিএস খতিয়ান নং-২৬২, এসএ খতিয়ান নং-১৯৯, বিএস খতিয়ান নং-৬৫৫/১-এর অন্তর্ভুক্ত এসএ দাগ নং-৬৬৫৩ ও ৬৬৫০ এবং বিএস দাগ নং-৯০৪৬ ও ৯০৩৯-এ অবস্থিত মোট ৩২ শতক জমির মালিক লিপি রানী সরকার। দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি নিয়ে প্রতিবেশী দুলাল চন্দ্র শীল গংদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল।
জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের হলে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, নীলফামারী থেকে লিপি রানী সরকারের পক্ষে রায় ও ডিক্রি প্রদান করা হয় (মামলা নং-৬৮/২০২১ ইং)। আদালতের রায়ের পর ওই জমিতে কলাগাছ রোপণ করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে দুলাল চন্দ্র শীলসহ কয়েকজন ব্যক্তি সংঘবদ্ধ হয়ে প্রায় ৪’শ কলাগাছ উপড়ে ফেলে নষ্ট করে। এতে আনুমানিক দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খবর পেয়ে লিপি রানী সরকারের ভাই শ্যামল চন্দ্র সরকার ঘটনাস্থলে গেলে দুলাল চন্দ্র শীল, শান্ত শীল, সাগর শীল, নির্মল চন্দ্র সরকার, হিমাংশু চন্দ্র সরকার ও সুধাংশু সরকারের নেতৃত্বে কয়েকজন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হত্যার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করা হয়। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানী উপস্থিত ছিলেন।
শ্যামল চন্দ্র সরকার বলেন, “মহামান্য আদালত থেকে রায় পাওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা জমিতে চাষাবাদ শুরু করি। কিন্তু প্রতিপক্ষরা আদালতের রায় অমান্য করে জোরপূর্বক জমি নিজেদের দাবি করছে। এতে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি পাচ্ছি।”
এ ঘটনায় তিনি নীলফামারী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বলে জানান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী মৃত খগেন্দ্রনাথ রায়ের পুত্র প্রকাশ রায়, রফিকুল ইসলামের পুত্র মো. লিটন আলী ও মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র রবিউল ইসলাম জানান, দুলাল চন্দ্র শীলসহ কয়েকজন ব্যক্তি কলাগাছ উপড়ে ফেলতে তারা নিজের চোখে দেখেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দুলাল চন্দ্র শীল বলেন, “আমি আমার জমিই দখল করেছি। কার্তিক চন্দ্রের জমির সঙ্গে তাদের জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। আদালতে আমার কোনো মামলা নেই।”
এ বিষয়ে লক্ষীচাপ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম রব্বানী বলেন, “এখানে বিষয়টি জটিল। এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।”
নীলফামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, “দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
https://slotbet.online/