আল আমিন স্বাধীন
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি :
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মাঠে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন ডা. ইকরামুল বারী টিপু। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির দ্বিতীয় মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। সে সময় মূল প্রার্থী ছিলেন সাবেক এমপি সামসুল আলম প্রামাণিক, যিনি ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। বর্তমান সময়ে ডা. টিপুর জনপ্রিয়তায় এই আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করার পর ১৯৯৩ সালে রাজনীতিতে যুক্ত হন ডা. টিপু। তখন এ আসনে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল ছিল। সেই সময় থেকেই তিনি ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির মূল সংগঠন পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৫ সালের দিকে নতুন প্রার্থীর সন্ধানে থাকাকালে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন টিপু। তবে দলীয় শৃঙ্খলা ও বাস্তবতা বিবেচনায় তিনি নিজে মনোনয়ন না নিয়ে সুইডেনপ্রবাসী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুল আলম প্রামাণিককে প্রার্থী করার প্রস্তাব দেন। তাঁর সেই কৌশলের ফলেই সামসুল প্রামাণিক ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হন। পরবর্তী দুই নির্বাচনেও বিজয় লাভ করেন।
তিনটি মেয়াদেই ডা. টিপু ছিলেন এমপির ঘনিষ্ঠ সহচর ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধা। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম মুখ্য নেতা। তিনি দুইবার মান্দা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও নওগাঁ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালে তিনি মান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সীমিত সুযোগেও তিনি ওই সময়ে এলাকায় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।
রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজে সক্রিয় ছিলেন শুরু থেকেই। চিকিৎসক হিসেবে প্রায়ই গ্রামগঞ্জে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। করোনা মহামারির সময় তিনি নিজে ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন, ত্রাণ সহায়তাও বিতরণ করেন। ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নেন তিনি। ইসলামি জলসা, তাফসির মাহফিল, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা ও হরিবাসরসহ বিভিন্ন আয়োজনে উপস্থিত থেকে সম্প্রদায়গত সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আন্দোলনেও মাঠে ছিলেন তিনি। বিএনপির চলমান কর্মসূচিতে হরতাল-অবরোধ, মশাল মিছিল, রোডব্লক সব ক্ষেত্রেই তাঁর সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কর্মীদের ভাষ্যমতে, মান্দা উপজেলায় বর্তমান সময়ে আন্দোলনের নেতৃত্বে তাঁকেই সবচেয়ে বেশি সক্রিয় দেখা গেছে।
ব্যক্তিজীবনে তিনি বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দিলেও রাজনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে সেই চাকরি ছেড়ে দেন। তাঁর স্ত্রী বিএনপির সহযোগী সংগঠন মহিলা দলের রাজনীতিতে সক্রিয়। একমাত্র সন্তান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
মনোনয়ন নিয়ে আশাবাদী কিনা এমন প্রশ্নে ডা. টিপু বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করেছি। চাকরি ছেড়ে ফুলটাইম রাজনীতি করছি। কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতিতে জড়াইনি। দল নিশ্চয়ই এসব বিবেচনায় নেবে। আমি আশাবাদী। দলে যদি ভালো মানুষদের মূল্যায়ন না হয়, তবে রাজনীতিতে ভালো মানুষের আসাটা বন্ধ হয়ে যাবে।’
এ আসনের ভোটারেরা বলছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডা. ইকরামুল বারী টিপু একজন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থী। এরই মধ্যে তিনি ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। বিএনপি এ আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চাইলে ডা. টিপুর বিকল্প প্রার্থী দেখছেন না তারা।
https://slotbet.online/