সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সুবিধাজনক প্রতিষ্ঠানে পদায়নের জন্য প্রায় কোটি টাকা বানিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা কর্মকর্তার এসব অনৈতিক কর্মকান্ডে দালালী হিসেবে কাজ করেছেন গুপিড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশিদ জিন্নাহসহ অফিসের কিছু কর্মচারী। এ নিয়ে শিক্ষামহলে নানা চাপাক্ষোভ ও গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২৩-এ ২য় গ্রুপে সিরাজগঞ্জ জেলায় ৩০১ জন নিয়োগ পান। এতে যোগদান করেন ২৮৪ জন। প্রথম দফায় পদায়নকৃত শিক্ষকদের পছন্দ ও সুবিধাজনক কর্মস্থলে যোগদানের জন্য প্রথম দফায় ৫০ থেকে ১ লাখ করে ঘুষ নেয়া হয় এবং ২য় দফায় ১ থেকে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে চরাঞ্চলের স্কুলগুলোতে যাদের পোস্টিয় দেয়া হয়েছিল তাদের সবার পোস্টিং বাতিল করে সুবিধাজনক কর্মস্থলে দেয়া হয়েছে। যে কারণে চরাঞ্চলের স্কুলগুলোতে শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারন করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদস্য যোগদানকৃত এক শিক্ষক বলেন, প্রথমে আমাকে মেছরার চরের এক স্কুলে পদায়ন করা হয়েছিল। আমার পারিবারিক ও ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য অনেক তদবির করেছি একটু সুবিধাজনক বা বাড়ির আশেপাশের স্কুলে পদায়নের জন্য নানা অনুরোধ করি। কিন্তু কাজ না হওয়ায় পরে দালালের মাধ্যমে ডিপিইও স্যারকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে সুবিধাজনক কর্মস্থলে যোগদান করেছি।
একই শর্তে আরেক শিক্ষিকা শিক্ষিকা বলেন, আমার ছোট ছোট দু’টি শিশু সন্তান ও স্বামী – সংসারের কারনে মানবিক বিবেচনায় একটু সুবিধাজনক স্কুলে পদায়নের জন্য এক লাখ টাকা দিতে হয়েছে।
সদর উপজেলার খামার পাইকশা গ্রামের নব্য নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক মোর্শেদুর রহমান বলেন, আমার নিজ গ্রামের স্কুলে শুন্য পদ ছিল। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাকে নিজ গ্রামে দেয়া হয়নি। সেখানে অন্য একজন শিক্ষককে অবৈধভাবে দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, প্রথমে আমাকে চরের বেতুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেয়া হয়েছিল। পরে তদবির করে পশ্চিম গাড়দহ স্কুলে এসেছি।
জামুয়া গ্রামের সদস্য নিয়োগপ্রাপ্ত হারুনার রশিদ নামে একজন শিক্ষক যোগদান করেছেন খামার পাইকশা স্কুলে। ২ লাখ টাকার বিনিময়ে আপনার সুবিধাজনক কর্মস্থলে যোগদান করেছেন জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ডিপিইও এবং জিন্নাহ স্যার আমাকে এখানে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে দালাল ও গুপিড়পাড়া স্কুলের ধান শিক্ষক খুরশিদ জিন্নাহ দাম্ভিকতার সাথে বলেন, এসব রিপোর্ট করে আমার কিছুই হবে না। আমার হাত অনেক লম্বা। ডিপিইও এবং টিইও আমার খুব কাছের মানুষ।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো, হারুনার রশিদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। তাই ভুলক্রমে, বিভিন্ন সুপারিশ ও মানবিক বিবেচনায় ২৫ জনকে সংশোধন করা হয়েছে। কোনো শিক্ষককের নিকট থেকে টাকা-পয়সা নেয়া হয়নি। একজন দালালের সাথে আপনার এতো সখ্যতা কেন, জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
https://slotbet.online/