সাত্তার আব্বাসী (চৌহালী প্রতিনিধি): সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ইমন হোসেন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি মাসুদ রানা (২৩) কে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন পশ্চিম মানিকদি এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দিবাগত রাত ১২টা ৩০ মিনিটে র্যাব-১২, সদর কোম্পানি, সিরাজগঞ্জ এবং র্যাব-৪, সিপিএসসি, মিরপুর-১, ঢাকার সমন্বিত অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামির অবস্থান শনাক্ত করে নির্ধারিত স্থানে অভিযান চালানো হয়। এর আগে মামলার দ্বিতীয় আসামি মো. সাকিব (২০) কে গত ৯ মে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে র্যাব-১ ও র্যাব-১২ এর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায়। হোসনা মার্কেট এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার সময় মাসুদ রানা তার পরিচিত এক তরুণীর সঙ্গে ইমনকে দেখে মেয়েটির পরিচয় জানতে চান। ইমন মেয়েটিকে তার ছোট বোন পরিচয় দিলে মাসুদ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। ঘটনার চার দিন পর, ১৮ এপ্রিল বিকেলে দৌলতপুর ডিগ্রি কলেজ মাঠে মাসুদ রানা ইমন ও তার বন্ধুদের দ্বারা শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত হন বলে র্যাব জানিয়েছে। এ সময় তার পকেট থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
পরে মাসুদ রানা ক্ষুব্ধ হয়ে বন্ধু স্বাধীন, সাকিবসহ আরও কয়েকজনকে ফোনে ডেকে আনেন এবং ইমনকে খুঁজে বের করেন। বেহাপাড়া গ্রামের নিকট ইমনকে পেয়ে মাসুদ রানা তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে ইমনের মাথায় আঘাত করেন। স্থানীয়রা সেখানে উপস্থিত হয়ে মাসুদ ও সাকিবকে আটক করে এবং ইমনকে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইমনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে আসার দুই দিন পর, ২৫ এপ্রিল ভোরে ইমনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে।
এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল বেলকুচি থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-১৭/২০২৫) দায়ের করা হয়। মামলাটি দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় নথিভুক্ত হয়। এরপর থেকে অভিযুক্ত মাসুদ রানা পলাতক ছিলেন। অবশেষে প্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করে র্যাব অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
র্যাব-১২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ আতিকুর রহমান মিয়া, পিপিএম বলেন, “চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামিকে গ্রেফতারের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হলো। দেশের প্রতিটি নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।” গ্রেফতারকৃতদের আইনানুগ প্রক্রিয়ার জন্য বেলকুচি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জাকেরিয়া হোসেন জানান, “আসামিদের আদালতে প্রেরণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ সোহেল সরকার কর্তৃক লন্ডন থেকে প্রকাশিত
সহ সম্পাদকঃ মোঃ শেখ ফরিদ বার্তা বিভাগঃ জিয়াউল ইসলাম জিয়া
সাথী সোহেল জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন (আর্তমানবতার সেবায়) বিকাশঃ ০১৩০২৪৪৭৩৭৩