
চোরাই পথে আসা ভারতীয় মোবাইল হ্যান্ডসেট ও অবৈধভাবে চীন থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে তৈরি করা নকল বিভিন্ন ব্রান্ডের স্মার্ট হ্যান্ডসেটে সয়লাব হয়ে উঠেছে বরিশালের মোবাইল ফোনের বাজার। এতে মোটা অংকের রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশে উৎপাদিত ‘মেইড ইন বাংলাদেশ ব্রান্ড’ খ্যাত কোম্পানিগুলো।
বরিশালের ফজলুল হক এভিনিউ, গীর্জা মহল্লা, ফাতেমা সেন্টার সহ বেশিরভাগ মোবাইল মার্কেট এখন ভারতীয় চোরাই মোবাইল ও চীন থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে তৈরি করা নকল হ্যান্ডসেটের দখলে। কষ্টে উপার্জিত টাকার বিনিময়ে নকল মোবাইল কিনে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
ব্যবহারের কিছু দিন না যেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এ সকল মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে, ক্যামেরা, স্পিকারসহ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। অভিনব কৌশলে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ সকল অসাধু বিক্রেতারা। এতে যেভাবে প্রতারিত হচ্ছে একজন গ্রাহক ঠিক তারচেয়েও মারাত্মক ঝুঁকিতে পরছে তাদের জীবন। কোনরকম নিরাপত্তা ও নিয়মের অনুসরণ না করেই তৈরি করা এ সকল নকল মোবাইলে যে কোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দূর্ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় মোবাইল ফোন বিস্ফোরণে দূর্ঘটনার ভয়াবহ চিত্র। এ সকল দূর্ঘটনার ৯৯ শতাংশই ঘটছে এ সকল নকল মোবাইল ফোনে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে- স্যামসাং এস ২৩ আল্ট্রা মডেলের হ্যান্ডসেটটি তাদের নিজস্ব ব্রান্ড শপে বিক্রি হচ্ছে ২ লাখ টাকায়। পক্ষান্তরে নিকটবর্তী অবৈধ দোকানে বক্স বিহীন একই মডেলের হ্যান্ড সেটের দাম লাখের নিচে। কম দামে ব্রান্ডের মোবাইল ফোন হাতে পাওয়ায় দেশে উৎপাদিত হ্যান্ডসেটের পরিবর্তে নকল মোবাইল গ্রহণে ঝুকছে গ্রাহকরা। এ সকল মোবাইল ফোনের বেশিরভাগই চোরাই পথে আসায় এর সাথে কোন কাগজপত্র কিংবা বক্স না থাকায় হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে বেশীরভাগই প্রশাসনের পক্ষে তা উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অপরাধের জন্ম দিচ্ছে এ সকল মোবাইল ফোন। সরকারের কাছে কোন তথ্য না থাকায় অপরাধ সংগঠনের নিরাপদ মাধ্যম হিসাবে অবাধে ব্যবহার করছে এ সকল মোবাইল ফোন।
এ বিষয়ে বরিশাল স্যামসাং ব্রান্ড শপের সদর রোড শাখার ম্যানেজার আল আমিন জানান, অবৈধ নকল মোবাইলের কারণে আমাদের ৬০ শতাংশ বিক্রি কমে গিয়েছে। বরিশালে ব্যাঙের ছাতার মত অবৈধ চোরাই ফোনের মার্কেট তৈরী হচ্ছে। দ্রুতই এসকল অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, সাধারণ নাগরিকদের সাথে প্রতারণা করলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পণ্যের ব্যবসা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ সোহেল সরকার কর্তৃক লন্ডন থেকে প্রকাশিত
সহ সম্পাদকঃ মোঃ শেখ ফরিদ বার্তা বিভাগঃ জিয়াউল ইসলাম জিয়া
সহকারী বার্তা সম্পাদক বি এম আবুল হাসনাত